রবিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৭

পরমেশ্বরের পা থেকে শূদ্র শ্রেণীর জন্ম নিয়ে বিভ্রান্তির জবাব

ইদানিং দেখা যায় বেশ কিছু ব্যক্তি নিজেদের সব্বোশ্রেষ্ট বলে বেড়ায়, তারা অারো বলে এনারাই সনাতন ধর্মে  অন্য সকলের থেকেও উচু। বাকীরা নিচে। কারণটা এক সেটা হলো পবিত্র বেদের একটা মন্ত্র, যদিওবা পবিত্র বেদমন্ত্রটি ঠিক কি নির্দেশ করেছে তা অামাদের জ্ঞানের পরিসীমার বাইরে। অার অামাদের পার্শ্ববর্তী মুমিনরাও মন্ত্রটাকে নিয়ে সনাতন ধর্মকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতে দ্বিধা করেনা। তাদের জ্ঞাতার্থে এটা অানতে হলো।
উক্ত মন্ত্রটা নিম্নরুপ-----
:
-----ব্রাহ্মণোহস্য মুখমাসীৎ
বাহূ রাজন্যঃ কৃতঃ।
-----ঊরূ তদস্য যদ্বৈশ্যঃ
পদ্ভ্যাং শূদ্রো অজায়ত।।
:
★অনুবাদ- ব্রহ্মপুরুষের মুখ হতে ব্রাহ্মণ, বাহু হতে ক্ষত্রিয়, ঊরু হতে বৈশ্য এবং পা থেকে শূদ্রের উৎপত্তি। :
★(ঋগ্বেদ ১০/৯০/১২)
:
:
বিচার
:
-------নিজেদের দেবসন্তান বা বীর সন্তান কল্পনা করবার আগে একটু সুস্থভাবে এবং স্বাভাবিক ভেবে দেখুন। দেহের পক্ষে চতুর্বিধ অঙ্গ সমানভাবে অপরিহার্য্য। দেহের স্বাস্থ্য এবং শক্তি ( ধী,বাহু,ধারণ,চলৎ) বড় কথা, আমাদের মাথা বড়, না পা বড়- এটি মূর্খদের ছেলেমানুষি তর্ক মাত্র।
.
আবার দেহের পক্ষে যা সত্যি, সমাজদেহের পক্ষেও তা-ই সত্যি।যে কোনও সমাজব্যবস্থা বা রাষ্ট্র ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে চলতে হলে ধীশক্তি,বাহুশক্তি,ধারণশক্তি এবং চলৎশক্তি সমানভাবে প্রয়োজন।
.
এই চতুর্বিধ শক্তির বাস্তব প্রতিনিধিদের নাম হল ব্রহ্মণ,ক্ষত্রিয়,বৈশ্য, শূদ্র। আমার পা যদি চলৎশক্তি হারিয়ে ফেলে, সেক্ষেত্রে আমার বিশাল মস্তিষ্ক অবসাদগ্রস্ত হয়ে যাবে তখন আমার মস্তিষ্ক প্রসূত হাজারো বুদ্ধি কি-ভাবে বাস্তবায়িত হবে?
আমার দুই হাত যদি বাইরের বাধাবিপত্তি সরিয়ে দিতে না- পারে, তখন আমার মস্তিষ্কের উর্বরতা বা পায়ের সচলতা কি কাজে, কিভাবে লাগবে?
:
গুণ ও কর্মের এই বিভাগ অবশ্যম্ভাবী এবং অপরিহার্য্য।এই অনুযায়ী আমাদের চার বর্ণের অবস্থিতি। কিন্তু পরবর্তীকালে বংশানুক্রমিক জাতিভেদের প্রথার যে উৎপত্তি হল তা এই গুণকর্ম বিভাগেরই বিকৃত রূপ মাত্র।প্রত্যেক সমাজ এবং কর্ম ব্যবস্থায় গুণকর্মের এই বিভাগ শাশ্বত এবং সনাতন, তবুও জাতিভেদপ্রথা হল স্বার্থপর ধর্মব্যবসায়ী মানুষের তৈরী এবং যা নিয়ে মানুষে মানুষে চিরকাল বিবাদ হানাহানি হয়েছে এবং হবে।
:
গুণকর্মের এই বিভাগ এই বেদমন্ত্রে আমরা প্রত্যক্ষ করি, আর যারা এই মন্ত্রের মধ্যে জাতিভেদ প্রথার সূত্রপাত অবিষ্কার করেন, তারা এই মন্ত্রের অপব্যাখ্যা করেন মাত্র।
:
চরম অনুতাপের বিষয় এই যে, এই ভার্চুয়াল ফেসবুকের জগতেও কিছু কিছু হিন্দু সম্প্রদায় ভুক্ত মানুষ প্রকাশ্যে নিজেদের মধ্যে বর্ণ, সম্প্রদায়, জাত নিয়ে সারমেয়দের মত কামড়াকামড়ি করতে তৎপর, যদিও তাদের নিজেদেরও অস্তিত্ব ধ্বংসস্তূপের উপর দাঁড়িয়ে আছে,তবুও তারা কামড়াকামড়ি থেকে বিরত থাকছেনা, কারণ তার নিজেদের বৈদিক হিন্দু না মনে করে অন্য কিছু ভাবতে বেশী পছন্দ করেন।
হিন্দু ঐক্যের কথা চিন্তা করে সকল হিন্দুদের কাছে অনুরোধ এদের থেকে তফাৎ থাকুন।
:
যেখানে অামাদের অস্তিত্ব বিপন্ন সেখানে অাছি জাতপাত নিয়ে।

>>>>> Kanchan Das<<<<<

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

শৌচকার্য করার পর কি করা উচিত??

✅প্রশ্ন---- হিন্দু ধর্মে শৌচকার্য করার অাগে ও পরে কি কি করতে হবে এই ব্যপারে কোন গাইড লাইন অাছে কি না? _____________________________________...