সমস্ত বিশ্বের বিভিন্ন প্রাচীন এবং অর্বাচিন সংস্কৃতির মধ্যে সমাজ কে বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্তিকরন ইহা দৃষ্টিগোচর হয়।
পরন্তু "সা প্রথমা সংস্কৃতি বিশ্বচারা" রূপে প্রসিদ্ধ এত সমৃদ্ধ বৈদিক সংস্কৃতি মধ্যে যে বর্নাশ্রমব্যবস্থার সুন্দর স্বরূপউপলব্ধ হয় উহা কোন অন্য সংস্কৃতি মধ্যে দৃষ্টিগোচর হয় না। বৈদিক বর্ণাশ্রম ব্যবস্থার প্রারম্ভিক সংগঠিত রূপ মধ্যে সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তির একাই মহত্বপূর্ণ বুঝে, কার্য
শ্রম তথা যোগ্যতাকে মুখ্য আধার স্বীকার করে তথা ব্যক্তিকে বিভিন্ন বর্ণে বিভাজিত করে ব্যষ্টি এবং সমষ্টির অতি
সুন্দর সমন্বয় সমুপস্খিত করে। যা বিশ্বের অন্য সংস্কৃতির মধ্যে উপলব্ধ হয় না।
সাহিত্য মধ্যে বর্ণ শব্দের প্রয়োগ সমুপলব্ধ হয়। বর্ণ শব্দ বৃজ বরণে ধাতু দ্বারা নিষ্পন্ন অথবা বর্ণ ধাতু দ্বারা ঘঞ প্রত্যয় যোগে নিষ্পন্ন হয়। বর্ণের অন্য অর্থ কোষ
কার সংকলিত করেছে পরন্তু এই প্রকরনে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শুদ্রের বোধই রয়েছে। তাদের এই শ্রেণীকরনকে বর্ণ ব্যবস্থা বলে। এবং বেদের
অনুসারে হওয়ার জন্য উহাকে বৈদিকী শব্দ দ্বারা অবহিত করা হয়েছে। এই প্রকার এই সমস্ত পদে বর্ণের সাথে আশ্রম ব্যবস্থাও যুক্ত হয়েছে। আশ্রম শব্দও আঞ পূর্বক শ্রমু ধাতু
দ্বারা নিষ্পন্ন হয়। যাকে ব্রহ্মচর্য, গৃহস্থ,বানপ্রস্থ এবং সন্ন্যাস এই চার শ্রেণীকরনে বিভক্ত করা হয়।
বৈদিক মান্যতা অনুযায়ী গুণকর্মের আধারের উপর শ্রেণীর
নির্ধারন হয়েছে। মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী বেদের ভাষ্য এবং ঋগবেদাদী ভাষ্য ভূমিকাই স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন
বেদের অনুসারে বর্ণ ব্যবস্থা করার পরই সমাজের সম্মক উন্নতি সম্ভব।বেদই সব সত্য বিদ্যার পুস্তক তথা ঈশ্বরই সমস্ত
বিদ্যার মূল। অতঃ বৈদিক মন্ত্রের আধারের উপর দেখা যায় তো ইহা স্পষ্ট হয় যে,
"ব্রাহ্মণোস্য মুখমাসীত" ইহা বেদের প্রশ্নোত্তর বিধি দ্বারা বুঝানো হয়েছে। যখন আমরা এই মন্ত্রের অর্থ জানার
প্রয়াস করি তখন পূর্বের মন্ত্র দেখা অতন্ত্য প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এই প্রকার- "মুখং কিমস্যাসীৎ কীং বাহু কিমূরু পাদা
উচ্যতে" ইহার অর্থ বোধের জন্য পানিনীয় সূত্রানুসারে,
ধাত্বর্থানাং সমন্ধে সর্বকালোষ্বেতে বা স্যুঃ "ছন্দাসি লুঙ্লিঙ্লিট" এর ধ্যান মন্ত্রে স্থিত অর্থ হচ্ছে, (অস্য) ইহার (মুখম) মুখ (কিম) কোনটি (অসীত) হয়, ছিল অথবা
আছে (কিম বাহু) দুই বাহু কোনটি (কিম উরু) উরু কোনটি (পাদ
উচ্যতে) ইহার পা কোনটি?
এই চার প্রশ্ন করা হয়েছে। ইহার উত্তর বেদমন্ত্র
দিয়েছেন-
→ব্রাহ্মণোস্য মুখমাসীদ্ বাহু রাজন্যঃ কৃতঃ।
→ঊরু তদস্য যদ্বৈশ্যঃ পদ্ভায়াং শুদ্রোঅজায়তঃ।।
(ঋগবেদ ১০।৯০।১২)
.
তাহার মুখ ব্রাহ্মণস্বরূপ, দুই বাহু ক্ষত্রিয়স্বরূপ, যে বৈশ্য ইহা তাহার
উরুস্বরূপ এবং তাহার পা শুদ্রস্বরূপ।
পূর্বে লিখিত প্রশ্নের চার উত্তর এই মন্ত্রে উপস্থিত করা হয়েছে। কিছু বিদ্বান ইহার বিপরীত অর্থ প্রস্তুত করে বলে যে, এই পরম পুরুষের মুখ থেকে ব্রাহ্মন উৎপন্ন হয়েছে ইত্যাদি। ইহা কেবল অনর্গল প্রলাপ মাত্র। ব্রাহ্মণ গ্রন্থে কোথাও মুখাদি থেকে বর্ণের উৎপত্তির বর্ণনা নেই কারন ইহা সৃষ্টি বিরুদ্ধ এবং অবৈজ্ঞানিক।।কাব্য শাস্ত্রে অলঙ্কার কাব্যের শোভা বর্ধক। বেদের মধ্যেও অনেক অলংকারিক বর্ণনা এসেছে। এখানেও বেদ তথা ঈশ্বরের অভিপ্রায় এই যে, সর্বপ্রথম সংসার মধ্যে জীবনাচারের নীতি অনুসারে মনুষ্যকে চার ভাগে ভাগ করা উচিত। যে মুখের কার্য্য করে সে ব্রাহ্মণ, যে বাহুর কার্য করে ক্ষত্রিয়, যে উরুর কার্য করে সে বৈশ্য এবং যে পা এর কার্য করে তাকে শুদ্র বলে অবিহিত করা হয়। প্রথমে মুখের কার্যের উপর দৃষ্টিপাত করা যাক-
.
মুখের কার্যঃ এই ভাগে জ্ঞান প্রাপ্তি করা সমস্ত ইন্দ্রীয় বিদ্যমান। এখানে সত্য অসত্যের নির্ণয় করা হয়। ভালো মন্দ সত্য অসত্যের নির্ণয করে ক্ষত্রিয়াদিকে আজ্ঞা দ্বারা প্রেরিত করে। শ্রবন মনন নিদিধ্যাসন বিবেক আদি যা কিছু বিচার সব মস্তকই করে। যেভাবে শরীরের মধ্যে মস্তক শরীরের মুখ্য ভাগ রূপে প্রধান কার্য করে। এভাবে বিবেকপূর্বক নিঃস্বার্থ এবং পরোপকারী যে মস্তিষ্কের মতো সমাজের কার্য করে তাহাকে ব্রাহ্মণ বলে। সে বিরাট বিশ্বের মানব সমূহের মুখ সদৃশ।
.
বাহুর কার্যঃ সম্পূর্ন শরীরের রক্ষার দায়িত্ব দুই বাহুর উপর আশ্রিত। ইহা শরীরের মধ্যে কোন বিপদ আসলে রক্ষার জন্য উদ্যত হয়। যুদ্ধ ক্ষেত্রে সংগ্রাম এই দুই বাহুই করে। এই রূপ সমাজরূপী পুরুষের উপর সঙ্কটাপন্ন স্থিতি আসলে নিজ বাহুবল দ্বারা ক্ষত্রিয় এদের ত্রান করে। " ক্ষত্রাত্ বিল ত্রায়ন ইত্যুদগ্রয়ত্রস্য শব্দৌ ভুবনেষু রুঢ"
.
উরুর কার্যঃ কটি দেশের অধ দেশকে উরু বলা হয়। এই ভাগকে বৈশ্য বলা হয়েছে। উরু যেমন সর্বত্র গমনে সাহায্য করে। সেইরূপ যিনি উরুর ন্যায় সকল দেশে গমনাগমন ও প্রবেশ করেন, উপার্জিত ধন সঞ্চয় ও সঞ্চিত ধনকে সমাজে যথাযথরূপে বিতরণ করেন, তিনিই বৈশ্য।
.
পা এর কার্যঃ আমাদের শরীরের সমস্ত ভার পা বহন করে। পা এর অভাবে শরীর পঙ্গু হয়ে যায়। তখন সংগ্রামের মধ্যে
বাহুবল কি আসবে? এইরূপ সমাজ সেবক বিনা সেই সমাজ পঙ্গু হয়ে যায়। এবং পা বিনা সমাজের উন্নতি কদাপি সম্ভব নয়।
সেইরূপ যিনি শারীরিক পরিশ্রম দ্বারা সমাজের ভার বহনপূর্বক
সমাজের সেবা করেন, তিনিই শূদ্র।
.
অতএব বৈদিক বর্ণ ব্যবস্থা গুন এবং কর্মের উপরই আধারিত। একজন ক্ষত্রিয়ও ব্রাহ্মণত্ব লাভ করতে পারে। বিশ্বামিত্র যেমন ক্ষত্রিয় হতে ব্রাহ্মণত্ব লাভ করেছিলো। বৈবস্বত মনুর পূত্র নভগ রাজ্য ত্যাগ করে ব্রাহ্মণ হয়ে যায় এবং গুরুকুল
স্থাপিত করে। একজন ব্যক্তির চার পুত্রও ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শুদ্র হতে পারে।
.
.
→কার্টেসি -- অগ্নিবীর ব্লগ।
মঙ্গলবার, ২৭ মার্চ, ২০১৮
বৈদিক বর্ণ ব্যবস্থা
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
শৌচকার্য করার পর কি করা উচিত??
✅প্রশ্ন---- হিন্দু ধর্মে শৌচকার্য করার অাগে ও পরে কি কি করতে হবে এই ব্যপারে কোন গাইড লাইন অাছে কি না? _____________________________________...
-
★সনাতন ধর্ম হাজার বছরে তিল তিল করে গড়ে ওঠা একটি ধর্ম। মানুষের জীবনের প্রত্যেকটি কাজের ব্যাপক পর্যালোচনার পরই ঋষিগণ একটি করে নিয়ম দিয়ে দিয়েছে...
-
অনলাইনে এখন অত্যন্ত গুরুত্ত্বের সাথে প্রচার করা হচ্ছে ঈশ্বরের প্রতিমা নাই, কিন্তুু সনাতনীরা প্রতিমা বানিয়ে পূজা করে কেনো? তাদের জন্য নিম্নের...
-
বর্তমানে অনলাইনে কিছু জ্ঞানপাপীর আগমন হয়েছে তারা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অপপ্রচার করে। তাদের অন্যতম নিকৃষ্ট একটি লেখা যেখানে তারা শু...
বৈদিক নিয়মানু্যায়ী, বিবাহকে কয়ভাগে ভাগ করা যায় এবং কী কী?
উত্তরমুছুন৮ ভাগে।
উত্তরমুছুনIf you're attempting to burn fat then you absolutely have to get on this totally brand new custom keto diet.
উত্তরমুছুনTo design this keto diet, certified nutritionists, fitness trainers, and top chefs united to develop keto meal plans that are efficient, painless, money-efficient, and enjoyable.
From their grand opening in early 2019, thousands of people have already remodeled their figure and well-being with the benefits a professional keto diet can give.
Speaking of benefits; in this link, you'll discover 8 scientifically-tested ones given by the keto diet.