মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৭

পবিত্র বেদ জীবকে মৃত্যুর আগ মুহূর্তে কি করতে বলা হয়েছে?

★ইদানিং কিছু আবাল গন্ডমূর্খ মডারেট  ভদ্রলোকরা দাবি করে সনাতন ধর্মীরা নাকি কিছু গোপন কথা কাউকে বলে না।
তাদের যদি বলি কি গোপন কথা যা আমরা লুকিয়ে রাখি?
ভদ্রলোকদের উত্তরটা শুনে মানুষতো দোর, কুত্তা বিলাই পর্যন্ত হাসতে হাসতে মাটিতে লুটুপুটু খাবে।
তাদের উত্তরটা হলো--- মৃত্যুর সময় নাকি তাদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর নাম শুনাতে হয়, তা না হলে নাকি জাহান্নামে যাবে।
.
★দেখি এই ভদ্রলোকদের দাবিটা কত্তো খানি সত্য?
পবিত্র বেদ এই সম্পর্কে কি বলে দেখি----
.
★(পবিত্র যজুর্বেদ ৪০/১৫)
.
★বায়ুরনিলমমৃতমথেধং ভষ্মান্ত শরীরম্।
★ওঁম ক্রুতো স্মর ক্লিবে স্মর কৃত স্মর।।
.
★পদার্থ-- (ক্রতো)হে কর্ম্মকর্তা জীব, (ওঁম) পরমাত্মার নাম, (ক্লিবে) সামর্থ্যের জন্য, (স্মর) স্বরণ কর, (কৃতম)কৃত কর্ম্মকে, (স্মর)স্বরণ কর, (বায়ুঃ) আধ্যাত্মিক প্রাণ, (অনিলম্) আধিদৈবিক প্রান, (অমৃতম)পরমাত্মাকে প্রাপ্ত হও,(অপ) তৎপর, (ইদং শরীরম্)- এই ভৌতিক শরীর, (ভস্মান্তম) ভস্মে শেষ হয়।
.
★বঙ্গানুবাদ- হে কর্মশীল জীব! শরীর ত্যাগের সময় পরমাত্মার নাম ওঙ্কার স্বরণ কর, আধ্যাত্মিক সামর্থ্য  প্রাপ্তির জন্য স্বরণ কর।
.
★ভাবার্থ -- অন্তোষ্টি সংস্কারই শেষ সংস্কার, ইহার পর শরীরের আর কোন সংস্কারই বাকী থাকেনা। ইহারই নাম নরমেধ, পুরুষমেধ, নরযাগ আর পুরুষ যাগ। শ্মশান ভূমিতে জ্বলন্ত চিতায় সমিধা সুগন্ধি, রোগনাশক আর বুদ্ধিবর্দ্ধক ঔষধি এবং ঘৃত আহুতি দ্বারা মৃত শরীরকে ভষ্মিভূত করায় অন্তোষ্টি সংস্কার, জীব তাহার নিজের কর্মের ফল নিজেই ভোগ করে,  বংশধরদের কোন কার্য্যই তাহাকে সাহায্য করিতে পারেনা।

Writer and Editor Kanchan Das

বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৭

কোন কাজ শুরু করার আগে কি বলতে হয়?

★সনাতন ধর্ম হাজার বছরে তিল তিল করে গড়ে ওঠা একটি ধর্ম। মানুষের জীবনের প্রত্যেকটি কাজের ব্যাপক পর্যালোচনার পরই ঋষিগণ একটি করে নিয়ম দিয়ে দিয়েছেন। এটা কয়েক বছরে বসে তৈরি করা সংবিধান নয় যে তা সর্বসময়ের জন্য অনুপযোগী বা ব্যবহারিক কর্মের বিধানের স্বল্পতা এতে রয়েছে। তাই সকল বিষয়ে রয়েছে এর সুনির্দিষ্ট পথ।
.
★কোন গোষ্ঠী বা দল কোন মাঙ্গলিক কাজ শুরুর পূর্বে কি বলছে তা তাদের গোষ্ঠীগত বিষয় কিন্তু সনাতন ধর্ম বলছে প্রত্যেক কাজের পূর্বে- ‘ওঁ তৎ সৎ’ বলে শুরু করতে। তাই সকলকে এক নির্দেশ মেনে চলা উচিত।
.
★দেখা যাক এসম্পর্কে শাস্ত্র কি বলে----
.
★ওঙ্কার দ্বারাই সমস্ত শব্দ-জগৎ পরিব্যপ্ত। ‘ওম’ এই শব্দটি সম্মতিজ্ঞাপক বলিয়া পরিচিত। ‘ওম শ্রবণ করাও’ এই বলিয়া যাজ্ঞিকেরা দেবতাদিগকে মন্ত্র শ্রবণ করাইয়া থাকেন; সামবেদীরা ‘ওম’ উচ্চারণপূর্বক সামগান করিয়া থাকেন। স্তোত্র পাঠকগণ ‘ওম শোম’ বলিয়া শস্ত্রনামক স্তোত্রসমূহ পাঠ করেন। যজুর্বেদিগণ প্রতিকর্মে ‘ওম’ উচ্চারণ করেন। ব্রাহ্মণগণ ‘ওম’ বলিয়া বেদাধ্যয়ন আরম্ভ করেন।
তৈত্তিরীয় উপনিষদ, ১/৮/১

★‘ওম’ এই অক্ষরকে উদগীথরূপে উপাসনা করিবে; কারণ প্রথমে ‘ওম’ শব্দ উচ্চারণ করিয়া পরে উদগীথ গান করা হয়। ছান্দোগ্য উপনিষদ, ১/১/১

★‘ওম’ উচ্চারণ করিয়া শ্রবণ করান হয়; ‘ওম’ উচ্চারণ করিয়াই মন্ত্রপাঠ করান হয় …  ছান্দোগ্য উপনিষদ, ১/১/৯

★‘ওঁ তৎ সৎ’ এই তিন প্রকার পরমব্রহ্মের নাম নির্দেশ করা হইয়াছে। গীতা, ১৭/২৩
.
★এই হেতু ব্রহ্মবিদগণ শাস্ত্রোক্ত কর্মে সর্বদা ‘ওঁ’ উচ্চারণ করেন। যাহারা মোক্ষ কামনা করেন, তাহারা ফল কামনা ত্যাগ করিয়া ‘তৎ’এই শব্দ উচ্চারণপূর্বক বিবিধ যজ্ঞ তপস্যা ও দানক্রিয়ার অনুষ্ঠান করেন। কোন বস্তুর শ্রেষ্ঠত্ব নির্দেশনার্থ ‘সৎ’ শব্দ প্রযুক্ত হয়; মঙ্গলকর্মেও ‘সৎ’ শব্দ ব্যবহৃত হয়। গীতা, ১৭/২৪-২৬

★ওঁ = অ, উ, ম। সংস্কৃত ভাষায় প্রত্যেক বর্ণের মাধ্যমে একটি করে শব্দ বোঝায়। যেমন : ক-তে সূর্য, খ-তে আকাশ। আর অ, উ, ম দিয়ে যথাক্রমে সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়রূপ ব্রহ্মবাচকতা বুঝায়। আর সন্ধির নিয়মানুয়ায়ী অ+উ=ও আর সাথে ‘ম’ নিয়ে ‘ওম’ অথবা ‘ওঁ’, সংস্কৃত যা সিম্বলিক।
‘ওঁ তৎ সৎ’ এই সংকল্প দ্বারাই সমস্ত কাজ করতে হয়। অর্থাৎ সর্বকর্মই পরমাত্মাকে স্মরণ করে ঈশ্বরার্পণ-বুদ্ধিতে করা উচিত।

শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৭

মৃতদেহ পোড়ানোর ব্যাখ্যা

প্রায়ই আপনাকে একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় – হিন্দুরা কেন মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলে? কবরও তো দিতে পারতো বা অন্যকিছু করতে পারতো। পুড়িয়ে ফেলা কি অমানবিক নয়?

আমাদের অজ্ঞতার কারণে আমরা প্রশ্নটির সঠিক উত্তর দিতে ব্যর্থ হই। প্রথমে যে ইনফরমেশনটি আপনার জানা প্রয়োজন তা হলো পৃথিবীর অর্ধেকের বেশি মানুষ হিন্দু-বৌদ্ধ রীতি অনুসরণ করে অর্থাত মৃতদেহ পুড়িয়ে সৎকার করে। পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত জাতি জাপান থেকে শুরু করে চীন, কুরিয়া, ভারত ও অন্যান্য জাতি এই রীতি অনুসরণ করে। তাহলে আপনি

প্রথমত: পাল্টা প্রশ্ন করতে পারেন :
পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত জাতি জাপানিরা কি তাহলে অমানবিক ?
পৃথিবীর অর্ধেক মানুষ কি অমানবিক ? যদি এই অর্ধেক মানুষ অমানবিক হয় তবে এদের মধ্যে কেন আমরা সবচেয়ে কম হানাহানি দেখতে পাই ?

আসুন এবার প্রকৃত উত্তরের দিকে যাই ।
১. হিন্দুধর্মে কবর দেয়া বা সমাধি দেয়া নিষিদ্ধ নয়। স্মৃতিশাস্ত্রে স্পষ্টভাবেই এটা অনুমোদিত। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মাঝে এখনও এটা প্রচলিত আছে। যেমন- নাথ বা যোগী সম্প্রদায় এবং সন্ন্যাসীদেরকে সমাধি দেয়া হয়। অনেক জায়গায় দেখা যায় কারও অপমৃত্যু হলে তার শব সমাধি দেয়া হয়, পোড়ানো হয় না।

২. আমরা কথ্য ভাষায় ‘লাশ পোড়ানো’ বলি, কিন্তু শাস্ত্রীয় ভাষায় এটা ‘অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া’। এটা আবার কী? অন্ত+ইষ্টি=অন্ত্যেষ্টি। ইষ্টি মানে যজ্ঞ। অন্ত্যেষ্টি হলো জীবনের শেষ যজ্ঞ।
আমরা জানি, আমাদের সুপ্রাচীন পূর্বপুরুষদের বৈদিক সমাজ ছিল যজ্ঞপ্রধান। জীবনের শুরু ‘গর্ভাধান’ থেকে জীবনের শেষ ‘দেহত্যাগ’ সবই হতো ঈশ্বরকে উদ্দেশ্য করে। জীবৎকালে প্রতিদিনই পঞ্চমহাযজ্ঞ করতে হতো (এখনও করার বিধান)। এছাড়া অগ্নিহোত্র যজ্ঞের মতো বিবিধ যজ্ঞে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে ‘হবি’ (বর্তমানে পূজায় অর্ঘ্য নিবেদনের মতো) উৎসর্গ করা হতো।
এ হলো ঈশ্বরের দেয়া জীবন ও দেহ দ্বারা ঈশ্বরের সৃষ্ট প্রকৃতির উপাদানসমূহ ভোগ করার প্রেক্ষিতে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে কৃতজ্ঞতাপূর্বক তাঁর উপাসনা করা। তাই অন্ত্যেষ্টি তথা জীবনের শেষ যজ্ঞে ঈশ্বরপ্রদত্ত এই দেহখানি ঈশ্বরের উদ্দেশ্যেই ‘হবি’ বা অর্ঘ্যরূপে উৎসর্গ করা হয়। এটা সত্যিই চমৎকার একটা ব্যাপার!

৩. প্রাচীন দর্শন অনুযায়ী বিশ্বচরাচর তথা আমাদের দেহও পাঁচটি ভূত বা উপাদান দ্বারা তৈরি। একে ‘পঞ্চভূত’ বলে। এগুলো হলো- ক্ষিতি (মাটি), অপ (জল), তেজ (আগুন), মরুৎ (বাতাস), ব্যোম (আকাশ বা শূন্যস্থান)। যারা বলেন ‘মাটির দেহ’ বা দেহ শুধু মাটি দিয়ে তৈরি, তাই একে মাটির সাথেই মিশিয়ে দেয়া উচিৎ, তারা অবশ্যই ভুল বলেন। বাস্তবে দেহ এই পাঁচটি উপাদানের সমষ্টি। শবদাহ করার মাধ্যমে দেহকে এই ৫টি উপাদানেই মিশিয়ে দেয়া হয় প্রত্যক্ষভাবে। দাহ শেষে অবশিষ্টাংশ জলে বিসর্জন দেয়া হয়। এজন্য শ্মশান সর্বদাই জলাশয়ের পাশে হয়ে থাকে।
অপরদিকে সমাধি বা কবর দিলে দেহ পঞ্চভূতে লীন হয় বটে, তবে পরোক্ষ ও ধাপে ধাপে। কারণ দেহ মাটির সাথে মেশে পঁচন প্রক্রিয়ায়। কোটি কোটি অনুজীব, পোকা-মাকড়ের খাবারে পরিণত হয় দেহ। এভাবে পঁচে গলে মাটিতে মেশানোই বরং দাহ করার চেয়ে বেশি অমানবিক মনে হয়।
একটা মজার তথ্য দিই। অনেক সময় আমরা বলি, লোকটা তো মরে ভূত হয়ে গেছে। প্রকৃতপক্ষে সে প্রকৃতিতে (পঞ্চভূতে) লীন হয়েছে -এটাই বুঝতে হবে।

৪. মৃত্যু হয় দেহের; আত্মার নয়। অবিনাশী আত্মা অজর, অমর, অক্ষয়, অব্যয়। এটা জগদীশ্বর পরমাত্মার অংশ। (‘বিদ্রোহী’ কবিতার কয়েক লাইন মনে পড়ে কি?) জড় প্রকৃতির পঞ্চভূতে গড়া দেহ ফিরে যায় পঞ্চভূতে, আর জীবাত্মা ফিরে যায় পরমাত্মাতে। (মৃত্যুর পরে অবশ্যই আর কখনোই আপনি পুরনো দেহে ফিরে আসবেন না, বা কোন প্রকার শাস্তি/আজাব ভোগ করবেন না। শবদাহ করার পরে/মাটিতে মিশে যাওয়ার পরে নিশ্চয়ই লীন হওয়া দেহকে শাস্তি/আজাব যৌক্তিকভাবে সম্ভব নয়।)

৫. মৃত্যু প্রকৃতপক্ষে শোকের কোন ব্যাপার নয়। তীর্থস্থান বেনারস বা কাশীতে মৃত্যুও একটা উৎসবের ব্যাপার।
“জাতস্য হি ধ্রুবর্মৃত্যো ধ্রুবং জন্ম মৃতস্য চ”-গীতা।
যে জন্মেছে তার মৃত্যু নিশ্চিত, যে মরেছে তার জন্মও নিশ্চিত।
অতএব, দেহান্তরের নিছক সাধারণ ঘটনায় শোক কেন?

বরং জরাজীর্ণ রোগশোকে আক্রান্ত দেহ ছেড়ে জীবাত্মার নতুন সুস্থ-সুন্দর দেহে জীবন আরম্ভের প্রাক্কালে মৃতকে হাসিমুখে শুভেচ্ছা জানানোই উচিত।

সম্পাদনায়---: কাঞ্চন দাশ

পাশা ও জুয়া খেলা কি সনাতন শাস্ত্র সমর্থন করে?

জুয়ার  নেশায় উন্মত্ত হয়ে অনেকে তাদের ধনসম্পদ, ঘরবাড়ী হারিয়েছে; এমন কি সাধ্বী স্ত্রীদেরও পরিত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। যে পাশা খেলে কেউ তাকে কোন কিছু ঋণ দেয় না, পিতা-মাতা, শ্বশুর-শ্বাশুড়ী সকলের তাকে ঘৃণা করে, এমন কি তার পক্ষে নিজ গৃহে রাত্রিযাপনও অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।

ঋগ্বেদের দশম মন্ডলের সমগ্র চৌত্রিশ সূক্তটি পাশা খেলা ও তার ভয়াবহ ফলশ্রুতির বিশদ বিবরণ লিপিবদ্ধ হয়েছে।

এখানে তার প্রয়োজনীয় অংশ তুলে দেওয়া হলঃ
‘আমার এ রূপবতী পত্নী কখনো আমার প্রতি বিরাগ প্রদর্শন করেনি … কিন্তু কেবলমাত্র পাশার অনুরোধে আমি সে পরম অনুরাগিনী ভার্যাকে ত্যাগ করলাম’ (১০।৩৪।১)।

যে ব্যক্তি পাশা ক্রীড়া করে তার শ্বশ্রু তার উপর বিরক্ত, স্ত্রী তাকে ত্যাগ করে, যদি কারো কাছে কিছু যাঙ্ঞা করে, দেবার লোক কেউ নেই। যেরূপ বৃদ্ধ ঘোটককে কেউ মূল্য দিয়ে ক্রয় করে না, সেরূপ দ্যুতকার কারও নিকট সমাদর পায় না’ (১০।৩৪।৩)।

‘পাশার আকর্ষণ বিষম কঠিন, যদি কারও ধনের প্রতি পাশার লোভদৃষ্টি পতিত হয়, তাহলে তার পত্নীকে স্পর্শ করে। তার পিতামাতা, ভ্রাতাগণ তাকে দেখে বলে আমরা একে চিনি না, একে বেঁধে নিয়ে যাও’ (১০।৩৪।৪)।

পাশার এই ভয়াবহ পরিণতির কথা জেনে ও স্বচক্ষে দেখেও মানুষ পাশার লোভ সংবরণ করতে পারে না। প্রথম প্রথম সে পাশার সঙ্গীদের পাশ কাটিয়ে চলার চেষ্টা করে কিন্তু ছকের ওপর পাশার পিঙ্গল গুটিগুলিকে বসে থাকতে দেখে তার সব সংকল্প ভেসে যায়। ফলে

‘ভ্রষ্টা নারী যেরূপ উপপতির নিকট গমন করে, আমিও তদ্রুপ খেলার সঙ্গীদের ভবনে গমন করি’ (১০।৩৪।৫)।

সুতরাং তার
‘স্ত্রী দীনহীন বেশে পরিতাপ করে, পুত্র কোথায় বেড়াচ্ছে ভেবে তার মা ব্যাকুল। যে তাকে ধার দেয়, সে আপন ধন ফিরে পাবে কি না এ ভেবে সশঙ্কিত। দ্যুতকারকে পরের বাড়ীতে রাত্রিযাপন করতে হয়’ (১০।৩৪।১০)।

কেবল তাই নয়

‘আপন স্ত্রীর দশা দেখে দ্যুতকারের হৃদয় বিদীর্ণ হয়, অন্যান্য ব্যক্তির স্ত্রী সৌভাগ্য ও সুন্দর অট্টালিকা দেখে তার পরিতাপ হয়। সে হয়তো প্রাতে শ্রীঘোটক যোজনাপূর্বক গতিবিধি করেছে, কিন্তু সন্ধ্যার সময় নীচলোকের ন্যায় তাকে শীত নিবারণের জন্য অগ্নি সেবা করতে হয়’ (১০।৩৪।১১)।
অর্থাৎ ‘সকালবেলা আমীর ভাই,  আর ফকির সন্ধ্যাবেলা।’

তাই ঋষি সকল পাশা খেলোয়াড়দের প্রতি উপদেশ দিচ্ছেনঃ

কখনও জুয়া খেলবে না, পরিশ্রমলব্ধ সম্পদ ভোগ কর ও পরিতৃপ্ত থাক, পরিশ্রমলব্ধ সম্পদই সত্যিকারের সুখ দিতে পারে। ঋকবেদ, ১০/৩৪/১৩

সোমরসের সন্ধানে

সোমলতা থেকে সোমরস তৈরি হতো। দেবতাদের উদ্দেশ্যে বিশেষ করে ইন্দ্রের উদ্দেশ্যে সোমরস অগ্নিতে আহুতি দেয়া হতো। ঋগ্বেদের নবম মণ্ডলে সোম দেবতা নামে সোমের স্তুতি করা হয়েছে। বলা হয় বহুকাল আগেই সোমলতা বিলুপ্ত হয়েছে কিন্তু তা কতটা ঠিক। প্রশ্ন তো উঠবেই এত জনপ্রিয় পানীয় সত্যি কি হারিয়ে গেছে?
লতা অর্থে শুধু পেচিয়ে গাছে জড়ানো উদ্ভিদ নয় বরং শীর্ণ কাণ্ড বিশিষ্ট উদ্ভিদও হতে পারে। বৈদিক যুগে হয়তো তেমনটাই বোঝাত। কেননা বেদে সোমলতার যে গাঠনিক বর্ণনা দেয়া হয়েছে তার সাথে কাণ্ডবিশিষ্ট উদ্ধিদের মিল পাওয়া যায়।

যেমন:
১. সোমলতার পাতা বিচিত্রকুশযুক্ত। ঋগ্বেদ, ১/২৩/১৩,১৪

২. হে সোম! তোমার যে দুটি পতো বক্রভাবে অবস্থিত ছিল তদ্বারা তোমার সর্বাপেক্ষা চমকার শোভা হয়েছিল। ঋগ্বেদ, ৯/৬৬/২

৩. হে সোম তোমার চতুর্দিকে লতা অবস্থায় যে সকল পত্র বিদ্যমান ছিল তদ্বারা তুমি সকল ঋতুতে সুশোভিত ছিলে। ঋগ্বেদ, ৯/৬৬/৩

৪. এ সোম শৃঙ্গ যূথপতি বৃষভের ন্যায় তীক্ষ্ম। ঋগ্বেদ, ৯/১৫/৪

উপরের বর্ণনাতে বর্তমানের ইক্ষু তথা আখ গাছের সাথে হুবহু মিলে যায়। আখের দুটি পাতা বাকা, আখ একবর্ষজীবী ৩নং মন্ত্রে তা বলা হয়েছে। আবার এর পাতা ষাড়ের শিং এর ন্যায় ৪নং এ বলা হয়েছে। শুধু তাই নয় ইক্ষু যেভাবে কান্ডের মাধ্যমে জন্মায় সোমের ক্ষেত্রেও তাই বলা হয়েছে।
হে সোম তোমার প্রধান উৎপত্তিস্থান স্বর্গের মধ্যে বিদ্যমান আছে, সেখান থেকে গ্রহণপূর্বক পৃথিবীর উন্নত প্রদেশে তোমার অবয়বগুলি নিক্ষিপ্ত হয়েছিল, সে স্থানে তারা বৃক্ষরূপে জন্ম নিল--ঋগ্বেদ, ৯/৭৯/৪।

আবার আখ চোলাই করে গুড় তৈরির পদ্ধতিটি বর্তমানে যেমন ঠিক একই পদ্ধতির কথা ঋগ্বেদের ১ ও ৯ মণ্ডলের যথাক্রমে ২৮ ও ৬৬ সূক্তে উল্লেখ করা হয়েছে সোমরসের ক্ষেত্রে।

অন্যদিকে সোমরসের রঙের বর্ণনা রয়েছে বেদে।
এর ধারা হরিৎবর্ণ। ঋগ্বেদ, ৯/৬৬/২৬

শুভ্রবর্ণ সোমরসগুলি ক্ষরিত হতে হতে এবং নানাবিধ স্তুতিবাক্য গ্রহণ করতে করতে উৎপাদিত হলেন। ঋগ্বেদ, ৯/৬৩/২৫

লেহিতবর্ণ সোমরসকে নিষ্পীড়নের দ্বারা প্রস্তুত করা হল। ঋগ্বেদ, ৯/৮২/১
ইক্ষুরস লোহিত, পিঙ্গল কিংবা রস নিষ্কাশনের পর শুভ্র বর্ণ ধারণ করে।

একারণে বলা যেতে পারে সোম হয়তো আখেরই অন্য নাম। পরবর্তী সময়ে এর নেশা জাতীয় যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে আখের আড়ালে সোম নামটি চাপা পড়েছে।
কিন্তু যারা সোমকে মদ বলে মনে করেন তাদের জেনে রাখা দরকার যে হিন্দুধর্মে মদ বা যেকোন নেশাকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

নকী রেবন্তঃ সখ্যায়া বিন্দসে পীয়ন্তি তে সুরস্বঃ।

য়দা কুয়োসি নদানু সমূহস্যাদিত পিতেব হূয়সে।। ঋগ্বেদ, ৮/২১/১৪

অনুবাদ:
তোমার নেশাকারী সঙ্গী অথবা বন্ধু যদি সবচেয়ে বিদ্বান বা ধনীও হয় তারপরও বজ্রপাততূল্য এবং অবশ্য পরিত্যজ্য।

সুরা বৈ মলমন্নানাং পাপ্মা চ মলমুচ্যতে।

তস্মাদ্ ব্রাহ্মণরাজন্যৌ বৈশ্যশ্চ ন সুরাং পিবেৎ।। মনুসংহিতা, ১১/৯৪

অনুবাদ:
সুরা হল অন্নের মলস্বরূপ, পাপরূপ তাই ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় নির্বিশেষে সকলের জন্যই অবশ্য বর্জনীয়।
সোমকে মদ হিসেবে ব্যাপক প্রচলনের দরুণ হয়তো আখের সমার্থক শব্দ সোম হারিয়ে গেছে। আজকের আখই হয়তো বেদের সোম জাতীয় উদ্ভিদ।

   

বুধবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৭

গোপীদের কাপড় চুরি করা নিয়ে শ্রীকৃষ্ণকে করা কটুক্তির এবং মুমিনদের অজ্ঞতার জবাব

বর্তমান জগৎ হলো অনলাইনের যুগ। অনলাইনে কিছু কাটু আছে যারা সর্বদা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মাথা ঘামায় ।
এদের কাজ হলো সনাতন ধর্মের বদনাম করে বেড়ানো। এইসব নিচুজাতের কাটুরা তো কোন দিন নিজ ধর্মের কিছুই জানেনা আবার আসে সনাতন ধর্ম সম্পর্কে ভন্ডামী করতে।
আসলেই এরা এতো নিম্ন মানসিকতার লোক তাদের কথা দেখলেই বুঝবেন।
তারা সর্বদা তাদের নিজ ধর্মকে ওপরে তুলতে চায়, তাই এদের মোক্ষম অস্ত্র মিথ্যা।
মিথ্যাকেই পুঁজি করে এরা সনাতন ধর্ম সম্পর্কে মিথ্যা অপবাদ করে বেড়ায়। এদের যতো বোঝাবেন ততই গিলতে থাকবে। কিন্তু কিছুই বুঝবেনা। না বুঝলে এদের পিছনে পড়ে থেকে লাভ নেই। কথায় আছে যে জেগে জেগে ঘুমাই তাদের জাগাতে যাবেননা।
.
এই কাটুদের অত্যন্ত নিচু একটা মিথ্যাচার হলো "কৃষ্ণ কীভাবে সৃষ্টিকর্তা হতে পারে যে স্নান রত নারীদের শরীর লুকিয়ে লুকিয়ে দেখে, আবার তাদের কাপড় চুরি করে"
.
এই অপপ্রচারটা প্রায় সব মুমিন করে থাকে কিন্তু আমাদের অজ্ঞতা তাদের এই অপপ্রচার করতে সুযোগ করে দেয়।
.
আজ পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের কৃপায় এই অপপ্রচারের জবাবটা লিখছি---
.
=============================
★জবাব--- মুমিনরা এই অপপ্রচারটা কেবল শ্রীকৃষ্ণকে নিয়ে করেনি, করেছে প্রত্যেক সনাতনীর আবেগকে।
সেই আবেগকে মনের মধ্যে রাখলেই সমাধান আসবেনা সেটাকে বাইরে বের করতে হবে।
.
মুমিনরা এই অপপ্রচারের জন্য কোনো শাস্ত্রের প্রসঙ্গ টানেনি কেবল বলেছে।
কিন্তু আমরা সনাতন ধর্মী হিসেবে কম বেশি নিশ্চয় শ্রীকৃষ্ণের জীবনী জেনেছি।
তাই আমরা সেই রকম কিছু প্রসঙ্গ আনবো যেটার মাধ্যমে মিথ্যাচারীদের মুখোশ উন্মোচন হবে।
.
"শ্রীকৃষ্ণ" যিনি পরমেশ্বর ভগবান। প্রত্যেক মানুষের জীবনে তিনটা সময় আসে শিশু, যুবক আর বার্ধক্য।
.
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জীবনী সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের তিনটি শাস্ত্রের সাহায্য নিতে হবে। শিশু বয়সের জন্য শ্রীমদ্ভাগবত, যুবক বয়সের জন্য মহাভারত এবং বার্ধক্য বয়সের জন্য হরিবংশ পুরান।
.
এখানে মুমিনরা শ্রীকৃষ্ণের শিশু বয়সকেই নির্দেশ করেছে।। কেননা গোপীগণ ছিলো শ্রীকৃষ্ণের বাল্য বয়সে। তাই আমাদের শ্রীমদ্ভাগবত এর সহায়তা নিতে হবে।
.
আসুন দেখে নিই আসল ঘটনাটা কি???
.
ভাগবতের ১০ম স্কন্ধের ২২ তম অধ্যায়ের নাম "বস্ত্র হরণ"
সেখানের ১-৬ নং শ্লোকে বলা হয়েছে---
অগ্রহায়ণ মাসে গোপীরা দেবী কাত্যায়নীর  ব্রত পালনের জন্য প্রবিষ্ট হলেন, সূর্য উঠার আগে থেকে তারা যমুনা নদীতে স্নান করতে যেতো, স্নান করার পর তারা বালি দিয়ে দেবী কাত্যায়নীর প্রতিমা গড়ে ধূপ, দ্বীপ,পল্লব, ফলমূলাদি ও অন্যান্য বস্তু দিয়ে তাঁর পূজা করতো।
গোপীরা দেবী কাত্যায়নীর তাছে প্রার্থনা করে বলতো "হে কাত্যায়নী, হে মহামায়া, হে মহাযোগীনি নন্দ গোপের পুত্রকে(কৃষ্ণ) আমার পতি করে দিন। পুরো একমাস তারা নিষ্টাভরে ব্রত পালন করেন। গোপীরা একে অপরের হাত ধরাধরি করে শ্রীকৃষ্ণের গুনকীর্তন করতেন।
.
এ তো গেলো ১-৬ শ্লোকের কথা। পরবর্তী শ্লোকের কথাগুলো নিম্নরুপ---
ভাগবত :- ১০/২২/৭
"একদিন (ব্রতের শেষ দিন) তারা অন্যান্য দিনের মতো নদীতে এসে নিজেদের অঙ্গবস্ত্র গুলি তীরে রেখে কৃষ্ণগুনগান করতে করতে গোপীরা আনন্দের সাথে জল ক্রীড়ায় মগ্ন ছিলেন"
.
ভাগবত:- ১০/২২/৮
"পরীক্ষিত বললেন- ভগবান শ্রীকৃষ্ণ হলেন যোগেশ্বরগণেরও ঈশ্বর, তার অজানা কোন কিছুই ছিলনা। তিনি তাদের(গোপী) মন বাসনা সফল করার জন্য বয়স্য পরিবৃত হয়ে সেই যমুনাপুলিনে আগমন করলেন। "
.
ভাগবত:- ১০/২২/৯
"তীরে পরিত্যক্ত গোপ কন্যাদের বস্ত্রগুলি সংগ্রহ করে তিনি সহ একটি কদম বৃক্ষের ওপর আরোহন করলেন এবং তার সঙ্গী বালকেরা এই কৌতুক দেখে হাসতে লাগলো এবং তিনিও হাসতে লাগলেন এবং কুমারীদের পরিহাস করতে বলতে লাগলেন।
.
ভাগবত:- ১০/২২/১০
"ওহে অবলাগণ এই যে দেখো তোমাদের বস্ত্রগুলি আমার কাছে রয়েছে,তোমরা ইচ্ছা মতো এসে নিয়ে যাও,আমি সত্যই বলছি, কোন রকম পরিহাস করছিনা আর করবোই বা কেনো তোমরা একমাস ব্রত পালন করতে করতে পরিশ্রান্ত ও দূর্বল হয়ে গেছো।"
.
ভাগবত:- ১০/২২/১১
"আর আমি যে মিথ্যা বলিনা, আগেও মিথ্যা বলিনি তা এরাও(গোপবালকেরা) জানে। কাজেই, সুন্দরীবৃন্দ তোমরা একজন হোক কিংবা সবাই একসঙ্গে তোমাদের কাপড় নিয়েও যাও। এই বিষয়ে আমার কিছুই বলবার নেই।"
.
ভাগবত:- ১০/২২/১২
"যাকে(কৃষ্ণ) কামনা করে তাদের এই ব্রত কিংবা কৃষ্ণসাধন তিনি স্বয়ং উপস্থিত হয়েছেন তাদের(গোপী) কাছে, নিজের থেকেই সুত্রপাত করেছেন এই কৌতুকলীলার, গোপীগনের প্রেমরস টল মল করছিল এই ঘটনায়, তবুও তারা লজ্জার বহিরাবরণটুকু ত্যাগ করতে পারছিলেন না, গোপীগণ সকলের মন সকলেই জানেন, তাই পরস্পর পরস্পরের দিকে তাকিয়ে গোপন হাসি আড়াল করতে পারছিলো না, যদিও শেষ পর্যন্ত কেউ জল থেকে উঠল না।"
.
উপরিউক্ত শ্লোক থেকে এটাই প্রমাণিত শ্রীকৃষ্ণ লুকিয়ে স্নানরত গোপীদের দেখছিলেননা। কেননা তিনি কাপড় নেওয়ার পর পরই সেটা গোপীদের বলে দিলেন। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ একা সেখানে যান সেখানে গোপবালকরা সহ গিয়েছিল।
কিন্তু মুমিনরা এমন ভাবে কথা গুলো প্রচার করে যেন শ্রীকৃষ্ণ একা গিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে গোপীদের জল ক্রীড়া দেখতেছে।
এটা মুমিনদের(Not all) অভ্যাস বলতে পারেন অন্যের বউয়ের দিকে কিংবা অন্যের মেয়ের দিকে কুদৃষ্টি দিয়ে তাকানো, ভাবতেছে মুমিনদের এই অভ্যাস শ্রীকৃষ্ণের ছিলো।
ওহে মুমিন উনি পরমেশ্বর জগতের সব কিছু তিনি দেখেন।
.
এইতো গেলো ১ম অংশ,  খেল আরো বাকি হে দোস্তো!!!
.
ভাগবত:- ১০/২২/১৩-১৪ তে স্পস্ট ভাবে উল্লেখ আছে শ্রীকৃষ্ণ গোপীদের পরিহাস করাতে গোপীগণ বিভিন্ন ভাবে শ্রীকৃষ্ণের কাছে মিনতি করেছে কাপড় ফেরত দিতে। কেননা নদীর ঠান্ডা জলে গোপীরা কাপতে লাগলো।
.
ভাগবত:- ১০/২২/১৫
এই শ্লোকে গোপীরা শ্রীকৃষ্ণকে উদ্দেশ্য করে বলল "হে শ্যামসুন্দর!  আমরা তোমার দাসী, তুমি যা বলবে আমরা তাই করবো, আমাদের কাপড় দিয়ে দাও, নইলে নন্দমহারাজকে বলে দিতে বাধ্য হবো।"
.
এখানে কিন্তু ভগবান গোপীদের নিজের দাসত্ব করতে বলেনি গোপীগণ নিজেরাই ভগবানের দাসী বলে স্বীকার করলো।
বাস্তবে আমরা সাবাই পরমেশ্বরের দাস। আমাদের উচিত একমাত্র ভগবানের দাসত্ব করা।

ভাগবত:- ১০/২২/১৬
"ভগবান বললেন তোমরা বলেছ আমার দাসী, তাই তাই তোমাদের বলছি তোমরা এসে কাপড় নিয়ে যাও।"
.
ভাগবত:- ১০/২২/১৭
পরীক্ষিৎ বললেন "সত্যিই গোপীরা খুব কষ্ট পাচ্ছিলেন,তাদের সর্বাঙ্গ কাঁপতে লাগলো, অবশেষে নিজেরা নিজেদের লজ্জাস্থান আবৃত করে জল থেকে উঠে এলো।"
.
প্রিয় পাঠকবৃন্দ আপনাদের মনে হয়তো প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে কেনো শ্রীকৃষ্ণ কাপড় নিয়ে নিল???
এই প্রশ্নের উত্তর নিম্নের দুইটা শ্লোকে আছে---
ভাগবত:- ১০/২২/১৮
"সেই গোপকন্যাদের মনে কোন কলুষ ছিলোনা,  তাদের শুদ্ধভাব ও সরলতা ভগবানের মনকে প্রসন্ন করলো, তার কথা মতো গোপীরা নিজের কাছে আসতে দেখে ভগবান বস্ত্রগুলি নিজের কাধে তুলে প্রীতিস্ননিগ্ধ হাসি দিয়ে বললেন।"
.
ভাগবত:- ১০/২২/১৯
"প্রিয় গোপীকাগণ তোমরা যে ব্রত গ্রহণ করেছিলে তা অত্যন্ত নিষ্টার সঙ্গে পালন করেছো তাতে কোন সন্দেহ নেই, অজ্ঞানতই তোমাদের একটা ক্রুটি ঘটে গিয়েছে, ব্রত পালনকালে জলে বিবস্ত্র হয়ে স্নান করা ভালো নয়, এতে জলের দেবতার(বরুন) প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়, তাঁর কাছে অপরাধ হয়, সুতরাং তোমরা পাপ মোচনের জন্য তার কাছে জোড়হাত মাথায় ঠেকিয়ে তাকে প্রণাম করে নিজেদের কাপড় নিয়ে যাও।"
.
ভাগবত ১০/২২/২০
ভগবান অচ্যুত এই কথা বললে গোপীগণ মনে করলো বিবস্ত্র স্নান করায় তাদের ব্রতচ্যূতি ঘটলো, গোপীগণ জানেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা তাই তারা ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে প্রণাম করে ক্ষমা প্রার্থনা করলো।"
.
ভাগবত ১০/২২/২১
"গোপীগণের প্রণত হতে দেখে ভগবানের করুনা হলো, এবং তাদের কাপড় ফিরিয়ে দেওয়া হলো।"
.
এখানেই শেষ নয়।
মুমিনগনকে শেষ বাঁশটাও দিয়ে দিই---
ভাগবত ১০/২২/২২ অনুসারে সেখানে বয়স্যরাও ছিলেন।
.
তাদের দেওয়া তথ্যমতে শ্রীকৃষ্ণ একাই ছিলেন।
কিন্তু পুরো ঘটনাটাই বিপরীত।
সেখানে প্রথমত শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন, দ্বিতীয়ত গোপ বালকেরা ছিলেন, তৃতীয়ত জলের দেবতা বরুনদেব ছিলেন এবং চতুর্থত ঘটনার শেষের দিকে বয়স্যরাও ছিলেন।
.
মুমিনদের পাতা ফাঁদে পা দিবেননা। নিজেই সত্যটাকে জানুন,সত্যকে বের করুন। সত্যকে বের করতে চাইলে স্বয়ং ভগবান আপনাকে অবশ্যই সহায়তা করবে।
.
পবিত্র বেদের অক্ষয় বাণী "সত্যমেব জায়তেঃ "
.
Writer and Editor Kanchan Das

মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৭

ধর্ম আর অধর্মের মধ্যে পার্থক্য

এই পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষই ধর্ম নিয়ে নানা সংশয়ে ভোগে। কোনটা ধর্ম, কোনটা অধর্ম; সেই ধর্ম কোথা থেকে এলো- এই সব নিয়ে আমাদের মধ্য কৌতূহলে শেষ নেই। যদি আপনাকে প্রশ্ন করে হয় যে----
আপনার কাছে ধর্মের প্রকৃত সংজ্ঞা কি? তবে আপনার উত্তর কি হবে, সেটা বিবেচনা করে দেখুন। মূলত, আমাদের যা নেই; তাই আমরা ঈশ্বরের কাছে চাই। ভয়, বিপদ, বাধা কাটিয়ে ওঠার জন্য ঈশ্বরই আমাদের আশ্রয় হয়ে ওঠে। আর, এটাও ঠিক যে- অভীষ্ট লাভের জন্ য দেবতার আশ্রয় নিতে গেলে তার জন্য কিছু ত্যাগ স্বীকার, কিছু ব্রত, নিয়ম, সংযম আর কিছু বস্তু উপহারের মাধ্যমে ঈশ্বরকে তুষ্ট করার চেষ্টাটা একটা প্রক্রিয়ার মধ্য পড়ে। আমাদের বৈদিক সনাতন ধর্মের সৃষ্টি হয়েছে প্রধানত এই ভাবনা থেকেই। বেদে দেবতা অনেক, মানুষের চাওয়াও অনেক। তাকেই একটা সংযত রূপ দেবার জন্য যাগ-যজ্ঞ, নিয়ম- সংযমের প্রক্রিয়া।
অথ্যাৎ, অস্তিত্বের বহু ঊর্ধ্বে উঠে স্রষ্টাকে একটু নেড়েচেড়ে দেখার প্রচেষ্টা। নিজের চাওয়া পাওয়ার জন্য সেই যে বিশাল নিয়ম-আচার বা কর্মের প্রথা তৈরি হয়েছিল- তা আজও শেষ হয়নি। কিন্তু, মানুষের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিমুহূর্তে সেই আচার অনুষ্ঠান পরিবর্তন হয়েছে, সৃষ্টি হয়েছে নতুন নতুন ধর্মের, নতুন নতুন মতের।
শুধুমাত্র ভারতবর্ষেই ধর্ম ব্যাপারটা ভীষণ রকমের পরিবর্তনশীল এবং বৈচিত্র্যর জায়গা। সত্যিকার অর্থে ধর্মের তত্ত্ব আমাদের মধ্যে অনেকেই জানে; কিন্তু ধর্মের মর্ম কতজন জানতে পেরেছে? আর সেইজন্যই আমাদের এই
ভারতবর্ষে 'ধর্ম' এক শ্রেণীর মানুষকে বানিয়েছে 'অসহায়' এবং আরেক শ্রেণীর মানুষকে বানিয়েছে 'terrorist অথ্যাৎ জঙ্গি'।
প্রতিদিনই পত্রিকার পাতা উল্টালেই আমাদের চোখে পড়ে ধর্মের নামে গুজব ছড়িয়ে তথাকথিত “ধর্ম রক্ষাকারী”দের নিপীড়ন আর ধ্বংস যজ্ঞ। ধর্মের নামে মুহূর্তেই তারা পুড়িয়ে ছাই করে দিচ্ছে অন্যের উপাসনালয় ও সাজানো ঘর। বাংলা ভাষায় যাকে বলে “সংখ্যালঘু নির্যাতন”। এগুলো কি আদ্যও কোন ধর্মের নমুনা???
অথচ, আমাদের সনাতন ধর্ম শিক্ষা দিচ্ছে- “তোমার কাছে যে অন্যায়টা অন্য করলে তোমার খারাপ লাগে, কষ্ট লাগে, সেই অন্যায়টা তুমি অন্য কোন মানুষের ওপর করো না। যে মানুষ নিজে বেঁচে থাকতে চায়, সে যেন কখনোই অন্যের জীবন নষ্ট না করে।” আমাদের ধর্মের সংক্ষিপ্ত উপদেশ এটাই- “তোমার নিজের যেটা ভালো লাগছে না, সেটা তুমি অন্যের উপর প্রয়োগ করো না।”
তাহলে, আজ আমাদের চারিদিকে কোনটি ধর্ম, আর কোনটি অধর্ম- আপনারাই তার সঠিক মূল্যায়ন করে দেখুন......

সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৭

সনাতন ধর্মে বিধবা বিবাহ সমর্থন করে

পরাশর সংহিতায় বলা হয়েছে-

==>>নষ্ট মৃতে প্রব্রজিতে ক্লীবে চ পতিতে পতৌ।
==>>পচস্বাপতসু নারীরাং পতিরন্যো বিধোযতে।।”
(পরাশর সংহিতা ৪.২৭)
.
অনুবাদ – নারীর যদি স্বামী মারা যায়,
তাঁর স্বামী যদি গোপনে সন্ন্যাস গ্রহণ করে
নিখোঁজ হয়ে যায়, স্বামী যদি নিখোঁজ
হয়ে যায়, স্বামী যদি সন্তান উৎপাদনে
অক্ষম হয়, স্বামী যদি অধার্মিক ও
অত্যাচারী হয় তবে নারী এই স্বামী ছেড়ে
পুনরায় বিবাহ করতে পারে।

এখানে আবার যুক্তি আসতে পারে যে বলা হয় স্মৃতিশাস্ত্র তো পরিবর্তিত হয়।  তো পরাশর সংহিতার কথা আমরা মানবো কেনো??

উপরিউক্ত যুক্তিটি বেশ ভালো, স্মৃতিশাস্ত্রের কথা না মানেন কিন্তু পবিত্র বেদে কথা অবশ্যই মানতে হবে তাই না??

তো দেখুন পবিত্র বেদ এই সম্পর্কে কি বলে --

★ইয়ং নারী পতি লোকং বৃণানা নিপদ্যত উপত্ব্য মর্ন্ত্য প্রেতম্।

★ধর্মং পুরাণমনু পালয়ন্তী তস্ম্যৈ প্রজাং দ্রবিণং চেহ ধেহি।।

.

পদার্থ:---- মর্ত্য-হে মনুষ্য, ইয়ং নারী-এই স্ত্রী, পতিলোকম-পতিলোককে অর্থাত্ বৈবাহিক অবস্থাকে, বৃণনা-কামনা করিয়া, প্রেতম-মৃত পতির, অনু-পরে, উপ ত্বা-তোমার নিকট, নিপদ্যতে-আসিতেছে, পুরাণম-সনাতন, ধর্ম্মম-ধর্মকে, পালয়ন্তী-পালন করিয়া, তস্য-তাহার জন্য, ইহ-এই লোকে,প্রজাম্-সন্তানকে, দ্রবিণং-এবং ধনকে, ধেহি-ধারন করাও।

.

★বঙ্গানুবাদঃ---হে মনুষ্য!এই স্ত্রী পুনর্বিবাহের আকাঙ্খা করিয়া মৃত পতির পরে তোমার নিকট আসিয়াছে।সে সনাতন ধর্মকে পালন করিয়া যাতে সন্তানাদি এবং সুখভোগ করতে পারে।

Writer and Editor Kanchan Das

যজুর্বেদ- ৩২/৩ এর ব্যাখ্যা

অনলাইনে এখন অত্যন্ত গুরুত্ত্বের সাথে প্রচার করা হচ্ছে ঈশ্বরের প্রতিমা নাই, কিন্তুু সনাতনীরা প্রতিমা বানিয়ে পূজা করে কেনো?

তাদের জন্য নিম্নের ব্যাখ্যাটা দিলাম---
.
★Yajur Veda 32.3: "Na Tasya Pratima Asti"
.
★As we all know, one shloka of from this important sukta 32.3 "Na Tasya Pratima Asti" is highly misqouted by anti Hindu and evil people like Jakir Naik.
Though everybody knows people like Jakir Naik are giving example of their evil deeds, they have no affinity with Vedas but only purpose is to fool Hindus and even muslims. Such lies has been exposed many a times.
This post provides the proper explanation. Please must read and share as much as possible.
Brahman,The transcendent ‘That’ :
( Shukla Yajur Ved, chapter 32 )
==========="Na Tasya Pratima Asti"===========
Sages of the Ved realized Brahman cannot be described by the epithets involving genders like he, she etc. Hence they used the epithet 'That'(Tat).
We know the mhavakya from Chhandogya Upanishad : " Tat Tvam Asi " ( "You Are That" i.e. you are verily the Brahman.)
The verse of Shukla Yajur Ved 32.1 states:
★"Agni is That,……Brahman is That,..…Waters are That…."
Verses like these point to the high spiritual and philosophical attainments of the sages.
The third verse states: " न तस्य प्रतिमा अस्ति "
.....Shukla Yajur Ved 32.3
"There is no pattern of That" / " There is no parallel to That" /
" There is no comparison of That".
Recently a misguiding anti-Hindu propaganda is going on by promoting this verse which claims that the persons of vedic age were against the worship of the God using murti or icon. This claim is baseless. The image or murti is a symbol of the supreme power and symbolism is used in the Ved many times. In the famous Purush Suktam of [Rig Ved 10.90] or in chap. 31 the Supreme Purush is symbolized by a being of innumerable heads.
Shukla Yajur Ved 32 :
.
★Agni is That, Aditya is That, Vayu is That, Chandramas is That, the bright One is That, Brahman is That, Waters are That, Prajapati is That. (32.1)
★All winkings of the eye arose out of the radiant Purusha. None has comprehended him above, across or in the midst. (32.2)
★There is none to compare with him/ There is no parallel to him, whose glory, verily, is great; whom we praise as 'Hiranyagarbha' ,'May he not destroy us','No one other than thee' etc. (32.3)
★He is the deity who pervades all the regions, born at first, he is also within the womb. Verily, he who is born and is to be born,meets his offspring facing him on all sides. (32.4)
★Before him there was nothing whatever born, who pervaded the entire world of created things; Lord of life, he rejoiced in his off-spring; Possessed of sixteen parts, he unites the three lights. (32.5)
★He through whom the heaven is strong and the earth firm,who has steadied the light and the sky's vault,and measured out the sphere of clouds in the mid-air.Who is the Deity we shall worship with our offerings? (32.6)
★To whom, supported by his help, two embattled armies look while trembling in their spirit, Where over them the risen Sun is shining. What God shall we adore with our oblation?When the mighty waters etc. He who in his might surveyed etc. (32.7)
★Vena beholds That Being, hidden in mystery,in whom all find one single home; In That all this unites; from That all issues forth; He, omnipresent, is warp and woof in created things. (32.8)
★Let the Gandharva who knows the Eternal, speak of that station which is parted yet wrapped in mystery.Three steps of That are in mystery hidden; he who knows them shall be the father's father. (32.9)
★He is our King, our Father, our Creator,he knows all ordinances and all beings, in whom Devas, attaining life eternal, have arisen to the loftiest station. (32.10)
★Having encompassed all creatures, encompassed all worlds, encompassed all the regions and directions,and approached the First-born of Eternal Order,he with the Self entered into the Self. (32.11)
★And going swiftly round the heaven and earth,around the worlds, around the quarters, around the sky,and lengthening out the wide-spread thread of Order,he saw That, he became That, he was That. (32.12)
★The wonderful Lord of the Assembly,dear to Indra, lovable, who bestows wisdom, has been approached by me. Hail! (32.13)
★The talent that Devas and Fathers esteem,with that talent, Agni, endow me today. (32.14)
★May Varuna give me talent,may Agni and Prajapati give it; May Indra and Vayu grant me talent, and Dhatr grant it to me. Hail! (32.15)
★Let both the spiritual and the political man possess the lustre that I seek. May the Devas give me the noblest lustre. To thee, that lustre, Hail! (32.16)
.
★Yajur Ved 25:10 :
हिरण्यगर्भः समवर्त्तताग्रे भूतस्य जातः पतिरेक ऽ आसीत |
स दाधार पृथिवीं द्यामुतेमां कस्मै देवाय हविषा विधेम ||
"That “Hiranya garbh” (Golden womb) who was present even before the creation of the world, who only is the master of this world, who beholds the earth and the space beyond, is alone worth to be praised."
---------------------------------------------
-----------------
★Mention Of Image Worship In Scriptures :
From Yoga Vashishtha :
"For those who have not known the essential nature of Deity, the worship of form and the like has been prescribed.To one who is incapable of (travelling) a distance of one Yojana (eight miles), a distance of one Krosa (two miles) is provided."
.
★From The Bhagavad Gita, Ch.12, Verse 5 :
"Greater is their trouble whose minds are set on the unmanifested; for the goal, the unmanifested, is very hard for the embodied to reach".
.
★In the Brihadaranyaka Upanishad, 4-14 :
The wife of sage Yajnyavalkya, and she herself a soul far advanced in the spiritual path, says to her husband:
"Constituted as we are, we need something concrete to fix our minds on and stir our imagination before we can think of subtler ideas".
.
★From The Mahabharata
Santi Parva, section CCXVII
Translated by Sri Kisari Mohan Ganguli
Bhishma said: "Some worship Brahman in images. Some worship Him as existing in attributes. Some repeatedly realise the highest Divinity which has been described to be like a flash of lightning and which is again indestructible. Others who have burnt their sins by penances, attain to Brahman in the end. All those high-souled persons attain to the highest end."
.
★এবার ন্যকামি করে বলিয়েননা প্রতিমা পূজা হা-রা-ম।

রবিবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৭

সনাতন ধর্মে অশ্লীলতা বিষয়ে অনলাইন মুসলিম এবং নাস্তিকদের কুটুক্তির জবাব

বর্তমানে অনলাইনে দুনিয়ায় কিছু আবালের আনাগোনা দেখা যায়। এরা এক জন থেকে আরেক,তার কাছ থেকে আরেকজন কপি মেরে মেরে দুইটা অপপ্রচার করতেছে।
কিন্তু কোন আবাল সত্যটা উৎঘাটন করে দেখতেছেনা সত্যিটা কি???
.
দেখবেই বা কেনো তাদের ধর্মই তো তাদের শিক্ষা দেয় সব কিছু অন্ধভাবে বিশ্বাস করতে।
.
দেখি তাদের অপপ্রচার==>>
.
============================
অপপ্রচার ১=>>>>
.
"""চিরাচরিত নিয়ম অনুযাই একদিন শিব তার পত্নী পার্বতীর সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হয়।
পার্বতী হলো দূর্গার অপর নাম। যখন শিবের প্রমত্ত যৌন উত্তেজনার ফলে পার্বতী মরনাপন্ন হয়ে পড়ে, তখন পার্বতী প্রান রক্ষার জন্য কৃষ্ণের উদ্দেশ্যে প্রার্থণা করতে থাকে। এ অবস্থায় কৃষ্ণ তার সুদর্শন চক্রের দ্বারা উভয় লিঙ্গ কেটে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে পার্বতীর প্রান রক্ষা করে। আর এই স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য প্রবর্তন হয় এই যুক্তলিঙ্গ পূজা । (ভগবত, নবম স্কন্ধঃ৫৯৮)"""
.
==============================
.
★জবাব-- সনাতনী দাদা দিদিদের কাছ থেকে প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি ওপরের চুতিয়াবাজদের লেখা কুরুচিপূর্ণ লাইনগুলো আমাকে টাইপিং করতে হলো তাই।
কি করবো ওটা না লিখলে মিথ্যাটা প্রায় সত্য হতে চলেছে আমাদের অজ্ঞতার জন্য।
লেখাটির শেষে দেখুন সেখানে রেফারেন্স হিসেবে ভাগবত নবম স্কন্ধ,৫৯৮।
নবম স্কন্ধটা মানা যায় কারণ ভাগবতে ১২ টি স্কন্ধ আছে যার মধ্যে নবম স্কন্ধও আছে।
কিন্তু তারপর দেখেন ৫৯৮ সংখ্যাটি, এটা দ্বারা কি বুঝানো হলো সেটাও বুঝলাম না।
কেননা আপনি যদি ভাগবত সম্পর্কে ধারণা থাকে তবে দেখবেন এটার রেফারেন্স গঠিত হয় --- স্কন্ধ + অধ্যায় + শ্লোক।
তারমানে তিনটা সংখ্যার ঘর থাকবে।
দ্বিতীয় ঘরে অধ্যায় থাকবে সেটা উপরেই উল্লেখ করেছি। এই চুতিয়াবাজরা দ্বিতীয় ঘরে ৫৯৮ লিখেছে। আমি ধরেই নিলাম সেটা অধ্যায়।
কিন্তু ভাগবত ৯ম স্কন্ধে আছে মাত্র ২৪টি অধ্যায় এখানে দেখতে পারেন ( http://bhagavata.org/canto9/c9-contents.html ) যদিও বা স্ক্রীনশট দিতে পারতাম কিন্তু এই জবাবটাতে তার আর দরকার নেই
.
হায় ভগবান!!!! কোথায় ২৪ আর কোথায় ৫৯৮!!!
এদের সুবুদ্ধি দাও হে প্রভু।
.
=============================
★অপপ্রচার (২)===>>
.
"এর পর পার্বতী নিজ যৌন চাহিদা মিটাতো তার পেছনের রাস্তা অর্থাত্ …. দিয়ে। আর
মাহাদেব যেহেতু লিঙ্গ কাটার পর পার্বতীর যৌন চাহিদা পুরা করতে পারত না। তাই পার্বতী অন্যান্য ভগবানদের সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হত। একদিনের ঘটনা। পার্বতী ভগবান বিষ্ণুর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়েছে। ঠিক এমন সময় সেখানে গনেশ এসে হাজির। গনেশ ছিল পার্বতীর আপন ছেলে। তখন পার্বতী গনেশের থেকে নিজেকে লুকানোর জন্য নিজ চেহারা তুলশীর চেহারায়
পরিবর্তন করে ফেলে। তুলশীর সাথে গনেশের পূর্ব থেকে যৌন সম্পর্ক ছিল। তখন গনেশ নিজ মা পার্বতীকে তুলশী ভেবে তার
সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়। পরবর্তীতে এই ঘটনা শিব জানতে পেরে অভিশাপ দিয়ে নিজ ছেলে গনেশের মাথা হাতির মাথায় পরিবর্তন করে দেয় । (স্কন্ধ পুরাণ, নাগর খন্ডম ৪৪৪১, পৃঃ১-১৬)
এই হলো শিব এবং শিবলিঙ্গের ইতিহাস।
.
=============================
.
★জবাব-- হাহাহাহাহাহাহাহা এটাই অাবালদের মূর্খামীর চরম নিদর্শন, মজার বিষয় স্কন্ধ পুরাণে, নাগর খন্ডকে ৪৪৪১টি অধ্যায় নাই, পৃষ্ঠা নং ১-১৬ তো দূরে থাক।মূল সংস্কৃত গ্রন্থে নাগর খন্ডমে মাত্র ২৭৯টা
অধ্যায়। তবে আবালরা ৪৪৪১নং অধ্যায় কোথাই পেলো?
এখানে ( https://en.m.wikipedia.org/wiki/Skanda_Purana) দেখতে পারেন।

শৌচকার্য করার পর কি করা উচিত??

✅প্রশ্ন---- হিন্দু ধর্মে শৌচকার্য করার অাগে ও পরে কি কি করতে হবে এই ব্যপারে কোন গাইড লাইন অাছে কি না? _____________________________________...